রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:২১ অপরাহ্ন




ঘরের ভেতর টং বানায়া কোনোমতে পরিবার নিয়া আছ বিপুল ইসলাম আকাশ,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

ঘরের ভেতর টং বানায়া কোনোমতে পরিবার নিয়া আছ বিপুল ইসলাম আকাশ,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

বিপুল ইসলাম আকাশ,সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার বেলকা, হরিপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার লোকালয়ে পানি ঢুকে গেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ ওই এলাকার মানুষেরা আশ্রয় নিতে ছুটছেন বাঁধের ওপর।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে ৮টিই নদীবেষ্টিত। ৭টি তিস্তা নদী ও একটি ইউনিয়ন ঘাঘট নদীবেষ্টিত। তিস্তা নদী বেষ্টিত ৭ ইউনিয়ন হলো—তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, চণ্ডীপুর ও কঞ্চিবাড়ী। আর ঘাঘট নদী গেছে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে। বন্যা এলেই দুর্ভোগ শুরু হয় নদী পাড়ের মানুষদের। তবে বর্তমানে ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুর্ভোগ শুরু হয়েছে তিস্তা নদী পাড়ের লোকজনদের। সেখানে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

শনিবার দুপুরে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত (শুক্রবার) থেকেই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে এখনো ইউএনও স্যারকে বলা হয়নি, তবে জানাচ্ছি।’

চেয়ারম্যান জানান, তাঁর ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কানি চরিতাবাড়ি, চর চরিতাবাড়ি, নকিয়ার পাড়া, পাড়া সাদুয়া, মাদারী পাড়া ও রাঘব গেন্দুরাম গ্রাম প্লাবন শুরু হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয় নিতে বাঁধে আসতে শুরু করেছেন এর আশপাশের লোকজন।

হরিপুর ইউনিয়নের নকিয়ার পাড়া গ্রামের মো. মুসলিম উদ্দিন (৫৫) বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর সময়ও পানি ছিল না। হঠাৎ রাত ১টার দিকে ঘুম ভাঙ্গে পানির শব্দে। জেগে দেখি ঘরের ভেতর পানি ঢুকছে। আমার ৪টা ঘরেই এখন হাঁটু পানি। কমছে না পানি বরং খালি বাড়তেছে।’তিনি আরও বলেন, ‘ঘরের ভেতর টং বানায়া কোনোমতে পরিবার নিয়া আছি। আর ছাগলগুলা জামাইয়ের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেছি।’

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থা চললে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা ব্যাপক তৎপর আছি। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসহ পরিবারের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তালিকাগুলো পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে। বেশি সমস্যা হলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাতে আশ্রয় নিতে পারবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com