রবিবার, ১১ Jun ২০২৩, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন
নিউজ ডেস্ক :
৩৬ ঘণ্টার মধ্যে নাসরিন হত্যা মামলার মূল আসামি মো. কমল ওরফে কুদ্দুসকে (৩০) কুড়িগ্রামের উলিপুর থানাধীন পূর্ববানা (চিলমারীরচর) এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
সোমবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারের বিষয় নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত মো. কমল (৩৩) কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার পূর্ববারা, (চিলমারীরচর) এলাকার আ. জলিলের ছেলে। অপর একজন পলাতক রয়েছেন, তাকে গ্রেফতারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযানে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও মূল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গত ১৯ মে সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া শিমা ডাইংয়ের পাশে ফাঁকা বালুর মাঠে এক অজ্ঞাত মহিলার মরদেহ হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। এ হত্যার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ভিকটিমের পিতা আশরাফ দেওয়ান বাদী হয়ে এজহার দায়ের করেন। সে মামলার সূত্র ধরে ফুল মিয়া ও কাশাল হৃদয় (২৫) ও মো. ফরহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে জানা যায়, মো. কমলকে গ্রেফতার করলে হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলার উক্ত ঠিকানা হতে মো. কমলকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, রাতে তিনি ও অভির উদ্দিনসহ থানার পাংখা শাহ মাজারে সাপ্তাহিক ওরশে গান শুনতে যান। ওরশের গান শেষে রাত ৩টায় নাসরিন আক্তারের (৪০) সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে একসঙ্গে চা পান করেন। এরপরে অভির উদ্দিনের সঙ্গে ভিকটিমের অর্থের বিনিময়ে একান্ত সময় কাটানোর কথা হলে ভিকটিম সম্মত হন। এর ধারাবাহিকতায় কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমকে নিয়ে একটি জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ঘরে প্রবেশ করেন। এরমধ্যে ভিকটিমের মোবাইলে একটি কল আসে এবং তিনি মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাহির হয়ে যান।
তাৎক্ষণিক ঘরে দুইজন লোক প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কমল ও অভির উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ ৯ হাজার ৪শ’ টাকা নিয়ে যান। এতে কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমের ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরবর্তীতে কমল ভিকটিমকে আরো টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের সঙ্গে আরো সময় কাটানোর জন্য বলেন।
নাসরিন রাজি হলে তাকে জালকুড়ি থানাধীন তালতলা খালপাড় বালুর মাঠে নিয়ে যান। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কমলের গলায় থাকা লালসালু কাপড় দিয়ে হাত বেঁধে এবং ভিকটিমের গায়ের ওড়না দিয়ে দুই পা বেঁধে লালসালু দিয়ে নাসরিনের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরবর্তীতে কমল ও অভির উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ভাড়া বাসায় এসে উভয়ই গ্রামের বাড়িতে চলে যান।
আসামি কমলকে গ্রেফতারের পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ও ঘটনার সময় আসামির পরিহিত সাদা লুঙ্গি ও গেঞ্জি উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। নিহত নাসরিন আক্তার (৪০) সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল (চেয়ারম্যান বাড়ি) এলাকার নয়ন মিয়ার স্ত্রী।