শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন




কোরবানির আগেই অস্থির মসলার বাজার

কোরবানির আগেই অস্থির মসলার বাজার

নিউজ ডেস্ক :
দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকার পর কোরবানির আগে অস্থির হতে শুরু করেছে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের গরম মসলার দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। বিশ্ববাজারে বুকিং রেট বেড়ে যাওয়া, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ রাখা এবং সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে মসলার দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের পাইকারি মসলার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪৩০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে তা বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৩৬০ টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে জিরার। বর্তমানে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকায়। এছাড়া গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫২০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে দারচিনি বিক্রি হয়েছে ২৯৫ টাকায়। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকায়। এছাড়া লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১ হাজার ৪০০ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৩০০ টাকায়।

এছাড়া কেজিতে ৭০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ধনিয়া ১৯০ টাকা, কেজিতে ৭০ টাকা বেড়ে তেজপাতা ২শ’ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি সরিষা ৩শ’ থেকে ৩৫০ টাকা, মেথি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, আলু বোখারা ৪৮০ থেকে ৫শ’ টাকা, কিশমিশ ৪৪০ থেকে ৪৬০ টাকা, কাঠবাদাম ৭৪০ থেকে ৭৬০ টাকা, কাজু বাদাম ৮২০ থেকে ৯৫০ টাকা, পেস্তা ২ হাজার ৬৬০ থেকে ২ হাজার ৭৫০ টাকা ও পাঁচফোঁড়ন ১৫০ থেকে ২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আদা প্রতিকেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিকেজি আদা ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি রসুনের কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

অন্যদিকে, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ ছাড়া অন্য কোনো পেঁয়াজ নেই। রোজার শেষদিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকা কেজিতে। সপ্তাহখানেক আগেও পণ্যটি ৪২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, বাজারে মসলার চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে, তাই দাম বেড়ে যাচ্ছে। বাজারে সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করার সুযোগ নেই। এখন প্রতিযোগিতামূলক বাজার।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়ৎদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এজন্য দেশি পেঁয়াজের দাম বেশি। তবে বাজারে পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ আছে। দেশি পেঁয়াজের দাম একটু বেশি হলেও ভালো। আমাদের দেশের কৃষকরা টাকা পাচ্ছে। এছাড়া আদা মাঝখানে আমদানি কম হয়েছে। এজন্য দাম একটু বাড়তির দিকে। এখন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চীন এবং মিয়ানমার থেকে আদা আমদানি হচ্ছে। দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা কম।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভরশীল। ওরা প্রয়োজন মতো দাম ওঠানামা করান। অনেক দিন ধরে গরম মসলার বাজার ঠান্ডা ছিল। আগামী মাসে আসছে কোরবানির ঈদ। ব্যবসায়ীরা কোরবানির ঈদকে টার্গেট করে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। অথচ তাদের কাছে পর্যাপ্ত মসলা রয়েছে। মসলার বাজার মনিটরিং করার দাবি জানান তিনি।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে থাকি। হঠাৎ করে দাম বাড়ছে কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখব। এরকম অভিযোগ পাওয়া গেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com