রবিবার, ১১ Jun ২০২৩, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন
মোঃ মহিদুল ইসলাম :
নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশ মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে আজ ২৪ সেপ্টেম্বর মীনা দিবস পালিত হচ্ছে। আসলে এই মীনা কে? মীনা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত জনপ্রিয় একটি টিভি কার্টুন। ১৯৯৩ সালে এই জনপ্রিয় কাটুনটি ২৯ টি ভাষায় তৈরী হয়। কমিক্স চরিত্র বিষয়ক কার্টুনটি ১৩টি পর্বে বানানো হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষামূলক একটি অনুষ্ঠান, ইউনিসেফ এই কার্টুনে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছিল। নয় বছরের মীনা কার্টুনে সেই সময় বাল্যবিয়ে বন্ধ করা, স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার করা, যৌতুক বন্ধ করা, ছেলে মেয়ে সমান পুষ্টি, সুযোগ সুবিধা সমান দেওয়া, বন্যায় করনীয়, পরিবেশ সচেতনতা, শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
মীনা ছাড়াও কার্টুনটিতে আরও চরিত্র ফুটে উঠেছে তা হলো তারই ছোট ভাই রাজু, পোষা টিয়া পাখি মিঠু, ছোটবোন রানী, মা-বাবা, দাদি, ফুফু, দোকানদার, দোকানদারের ছেলে, স্কুলের বড় আপু রিতা, মোড়ল, মীনাদের গরু, লালী ও ছাগল মুনুমন। মীনা শিশু-কিশোরদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় বাংলা কার্টুন। এ কার্টুন ছবি তৈরী করেছে ইউনিসেফ। প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর দিবসটি বেশ উৎসব মুখরভাবে সারাদেশে পালন করা হয়। নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশে মানসম্মত শিক্ষা থিমকে সামনে নিয়ে সারা দেশে মীনা দিবস উদযাপন হচ্ছে। আসলে মান সম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে গেলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশ দরকার। শিক্ষার্থীদের নামে ভয়ভীতি থাকলে কখন ও শিক্ষা প্রসারিত হতে পারে না। একটি শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, নান্দনিক, আধ্যাত্বিক ও আবেগিক বিকাশ সাধন এবং তাদের দেশাত্মবোধে বিজ্ঞান মনস্কতায় সৃজনশীলতায় উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। বিদ্যালয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি সংগীত, অঙ্কন, খেলাধুনা, শিক্ষা সফর, বনভোজন, কাব স্কাউটিং, বির্তক প্রতিযোগীতা অভিনয়, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার আয়োজন করতে হবে। শিশুদের আদর. যতœ. ¯েœহ ভালোবাসা দিয়ে পাঠদান করতে হবে। স্কুল ভীতি দূর করতে হবে। শির্ক্ষাথী যেন ঝরে না পড়ে প্রয়োজনে হোম ভিজিট বাড়াইতে হবে। শিক্ষকদের গতানুগতিক পাঠদান পদ্ধতি থেকে বাহিরে আসতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে যুযোপযোগী ও আধুনিক ধ্যান ধারনা দিয়ে ল্যাপটপ মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার করে পাঠদান করতে হবে। বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত ব্যবস্থাপনা, শ্রেণি ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা, শিশুর বয়স ও রুচির প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। শিশুর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা দেওয়া যেমন-যে শিশু আঁকতে চায় তাকে আকঁতে দেওয়া, যে গাইতে চাই তাকে গাইতে দেওয়া, যে ক্রিকেট খেলতে চায় তাকে ক্রিকেট খেলতে দেওয়া, যে ফুটবল খেলতে চায় তাকে ফুটবল খেলতে দেওয়া, তার মনের বাইরে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ না করা। তাদের নৈতিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিদিন এসেম্বলিতে মনীষীদের জীবনের দুই একটি গুরুত্বর্পুণ ঘটনা তাদের মধ্যে আলোচনা করা যেতে পারে। আনন্দঘন পরিবেশ পেলে শিশুরা শিখবে হেসে খেলে। আজ সারা দেশে মীনা দিবস উদ্যাপনের জন্য ইউনিসেফের সহযোগীতায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিপত্রে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখোরিত হবে উপজেলা চত্ত¡র। আনন্দ নিয়ে পড়ব, সুন্দর ভবিষ্যত গড়ব, মান সম্মত শিক্ষা পেতে স্কুলে রোজ হবে যেতে, স্বাস্থ্য বিধি মানবো, কোভিড মুক্ত থাকবো, বিদ্যালয়ে সুরক্ষিত পরিবেশ মানসম্মত শিক্ষায় আনন্দের রেশ। বিদ্যালয়ের আনন্দদায়ক পরিবেশ মান সম্মত শিক্ষা পাবে ছাত্রছাত্রী নির্বিশেষ। প্রতিদিন স্কুলে যাই, লেখা পড়ার বিভেদ নাই। এই শ্লোগান গুলোতে শিশুদের উৎসাহিত করা, গল্প বলার আসর, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরন, র্যালি, চিত্রাংঙ্কন, যেমন খুশি তেমন সাজো সহ নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি আমাদের শিশুদের মাঝে আরো আনন্দময় হোক এই প্রত্যাশায়।
লেখক : সহকারী শিক্ষক, বাংলাহিলি ১ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,হাকিমপুর, দিনাজপুর