শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:১৩ অপরাহ্ন




লালমনিরহাটে ছেলের হাতে বাবা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

লালমনিরহাটে ছেলের হাতে বাবা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

কাওছার মাহমুদ লালমনিরহাট :
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় পিতা গোলাম হোসেনের কবিরাজী চিকিৎসার কারণে যৌন ক্ষমতা হারিয়েছে এমন ক্ষোভ থেকে নিজের পিতাকে কুপিয়ে হত্যা মামলার রহস্য দীর্ঘ চার বছর পর সিআইডি কর্তৃক উদ্ঘাটন করেছে।
২ জুন ( বৃহস্পতিবার) জেলা সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে,পিতার কবিরাজি চিকিৎসার কারণে যৌন ক্ষমতা হারিয়েছে এমন ক্ষোভ থেকে নিজের পিতাকে খুনের ঘটনা ঘটেছিল কালিগঞ্জে উপজেলার অচিনতলা গ্রামে। ৪ বছরের দীর্ঘ তদন্ত শেষে অবশেষে ক্লুলেস হত্যা মামলাটির রহস্য উদঘাটন করে খুনিকে গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে জেলা অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা (সিআইডির) অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল পিপিএম (বার) বলেন, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই কালিগঞ্জের অচিনতলা এলাকায় গভীর রাতে নিজ শয়নকক্ষে খুন হন গোলাম হোসেন। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায়, কাধে, ঘাড়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
তার বড় ছেলের দায়ের করা মামলায় তদন্ত কাজ শুরু করলেও কোন রহস্য খুজে পাওয়া যায় না। দীর্ঘ চার বছরে ছয়জন তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্লুলেস মামলাটির রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি।
এই বছরের মার্চে ৭ম তদন্ত কারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জায়েদুল ইসলাম জাহিদ। দায়িত্ব নিয়ে এই মামলার সন্দিগ্ধ আসামি গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় পুত্র জাহাঙ্গীর আলমকে ১০ এপ্রিল আটক করে আদালতে সাত দিনের রিমাণ্ড আবেদন করেন। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে সুকৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তার পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
আটককৃত আসামী পুত্র জাহাঙ্গীরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তার বাবা ২০০৯ সালের দিকে কবিরাজি চিকিৎসায় তার যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে দেন। পরের বছর বিয়ে করলে বাসর ঘরে তিনি বুঝতে পারেন তার যৌন ক্ষমতা নাই।
সেই থেকে স্ত্রীর সাথে এই বিষয়টি নিয়ে মনোমালিন্য শুরু হয়। দীর্ঘ আট বছরের সংসার জীবনে অক্ষমতা নিয়ে স্ত্রীর সাথে কলহ, বিরোধ লেগে থাকলে পিতার প্রতি ক্ষোভ তৈরি হতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করলে যৌন ক্ষমতা ফিরে পাবেন মনে করে পরিকল্পনা করতে থাকেন।
ঘটনার দিন স্ত্রী ঢাকায় গার্মেন্টস এ থাকায় এবং হালকা বৃষ্টি ও বাতাস দেখে রান্না ঘর থেকে দা এনে তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। বাড়ির পাশে গর্ত করে লুকিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করলেও পিতার গোঙানিতে বড় ভাই ও ভাবি আসলে তিনি আর মরদেহ লুকাতে পারেননি। পরক্ষনে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এসময় জেলা সিআইডির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com