শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন




কারমাইকেল কলেজের গাছে পাখির জন্য মাটির হাঁড়ি বেঁধে দিচ্ছেন ভলান্টিয়াররা

কারমাইকেল কলেজের গাছে পাখির জন্য মাটির হাঁড়ি বেঁধে দিচ্ছেন ভলান্টিয়াররা

স্টাফ রিপোর্টার :
পাখি বাঁচান, পরিবেশ সুস্থ রাখুন ও আনন্দময় জীবন গড়ুন। পাখি রক্ষায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ, আপনিও সামিল হোন। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রংপুরে পাখি সংরক্ষণে সচেতনতা তৈরি করতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ রংপুরের ভলান্টিয়াররা।

ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মধ্যে পাখি হত্যা, পাখির আবাসস্থল নষ্ট না করা’র আহ্বান জানিয়ে রংপুরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ কারমাইকেল কলেজের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাইনবোর্ড ও পাখিদের নিরাপদে আশ্রয় নিতে গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বেঁধে দিয়েছেন। নিজেদের অর্থ দিয়ে তারা এই মহতী কাজ বাস্তবায়ন করছেন।

গাছে গাছে ভলান্টিয়াররা সুন্দর করে মাটির হাঁড়ি বেঁধে দেয়। পাখিপ্রেমী ছাত্র-যুবকদের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নজর কেড়েছে কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের। এ কাজের জন্য তারা প্রশংসা পাচ্ছেন সবস্তরের মানুষের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯ মে বৃহস্পতিবার শুরু করে কার্যক্রম। এ দিনব্যাপী কারমাইকেল কলেজের বিভিন্ন গাছের ডালে মাটির হাঁড়ি বসিয়ে দেয়। বড় মই ব্যবহার করে মাটির হাড়ি লাগানোর কাজ করে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ রংপুরের ভলান্টিয়াররা। মাটির হাঁড়ি লাগানোর পাশাপাশি একটি সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন করে তারা।এ সংগঠনের সকল সদস্যই হলেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

এরই মধ্যে কারমাইকেল কলেজের বিভিন্ন গাছে পাখি নিরাপদে আশ্রয় নিতে ৫০ টি মাটির হাঁড়ি বাঁধা হয়েছে। তারা আরো অন্যান্য কলেজ ও বিভিন্ন স্থানে মাটির হাঁড়ি বাঁধবেন।

এ প্রজেক্টের লিডার সাদমান সাবাব ঢাকা মেইলকে জানান, প্রকৃতিতে পাখির ভূমিকা অপরিসীম। পাখির কিচির মিচির শব্দ সবার মনকে প্রফুল্ল করে দেয়। নিরাপদ আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে পশু-পাখির সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। পাখিরা বিশেষ করে গাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে। গাছেই তারা ডিম পাড়ে ও বাচ্চা ফোটায়। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে গাছে আশ্রিত পাখির ক্ষতি হয়ে থাকে। অপরিকল্পিতভাবে ঘর-বাড়ি, দালান-কোঠাসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ, পুকুর, ডোবা জলাশয় ভরাট এবং কেটে ফেলা হচ্ছে ঝোপ-ঝাড়। এতে পাখির আবাসস্থল কমে যাচ্ছে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে জীব বৈচিত্র। এসব দিক বিবেচনা করে পাখির জন্য একটি নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়। কলেজের বড় বড় গাছে মাটির হাঁড়ি বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। মাটির হাঁড়ি গুলোর ওপরের অংশ খোলা। এসব মাটির হাঁড়িতে বাসা তৈরি করবে পাখিগুলো। সেখানেই ডিম দিবে এবং বাচ্চা ফুটাবে। আমরা এমনই স্বপ্ন দেখছি সবাই মিলে।

ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের প্রজেক্ট অফিসার জান্নাত মোহনা বলেন, আমরা গাছে মাটির হাঁড়ি বসিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করছি। যাতে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে পাখি হত্যা না করে কেউ।

পাখির আবাসস্থল তৈরির সময় উপস্থিত থেকে উৎসাহ দেন কারমাইকেল কলেজের গনিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ সাদী। তিনি ব্যতিক্রমী পাখি প্রেমের এমন উদ্যোগেকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, নিসন্দেহে একটি ভালো কাজ করছে ছেলেমেয়েরা। আমি এসব কাজে তাদের যে কোন সহযোগিতায় ওদের পাশে থাকবো।

পাখির আবাসস্থল তৈরির কাজটি চলমান থাকবে জানিয়ে সংগঠনের সদস্যরা বলেন, এ বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে আগামী দিনে মাইকিংসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক লিফলেটও বিলি করবেন।
এদিকে পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন এমন কয়েকজন পাখির আবাসস্থল তৈরির কাজের প্রশংসা করে বলেন, এটি পরিবেশের জন্যই মঙ্গল। তাই এ বিষয়ে সকলকে এগিয়ে আসারও আহবান জানান।

সার্বিকভাবে প্রজেক্টটি পরিচালনা করেন রংপুর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড। এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নুসরাত ঐশী, ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ মাহমুদ, জেনারেল সেক্রেটারি আবিদ আল মারুফ, প্রজেক্ট অফিসার জান্নাত মোহনা, হিউম্যান রিসোর্স অফিসার সালমা উম্মে কুলসুম সুমা।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com