শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৭ অপরাহ্ন




তিস্তা বাঁচাও, ভাঙন ঠেকাও,মানুষ বাঁচাও, রংপুর বিভাগের বৈষম্য দূর কর, ৬ দফা দাবিতে তিস্তা কনভেনশন

তিস্তা বাঁচাও, ভাঙন ঠেকাও,মানুষ বাঁচাও, রংপুর বিভাগের বৈষম্য দূর কর, ৬ দফা দাবিতে তিস্তা কনভেনশন

কাওছার মাহমুদ, লালমনিরহাট :
তিস্তা বাঁচাও, ভাঙন ঠেকাও,মানুষ বাঁচাও, রংপুর বিভাগের বৈষম্য দূর কর, তিস্তা নদী খনন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, তিস্তা চুক্তি সই হ ৬ দফা দাবিতে তিস্তা কনভেনশন ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ মে (শনিবার) সকাল ১১টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা ব্রিজের পাশে তিস্তা ডিগ্রি কলেজ মাঠে নিজস্ব অর্থায়নে বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ ছয় দফা দাবিতে তিস্তা কনভেনশনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ। এসময় তারা বলেন, তিস্তা নদীকে বাঁচানো না গেলে তীরবর্তী মানুষের জীবন-জীবিকা ধংস হয়ে যাবে।

শনিবার (১৪মে) দুপুরে তিস্তা ডিগ্রি কলেজ মাঠে তিস্তা কনভেনশন সভায় তিস্তা তীরবর্তী মানুষসহ নেতারা এই হুঁশিয়ারি দেন।

এসময় সভায় তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদেরর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাফিয়ার রহমান, স্টিানডিং কমিটির সদস্য ড. তুহিন ওয়াদুদ ও গেরিলা লিডার শফিকুল ইসলাম কানুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
নেতারা বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলগুলোতে সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকারও বেশি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। কিন্তু রংপুরের বিভাগের কোন প্রকল্প তারা দেয়নি। মাত্র সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা ঝুলে রেখেছে। অথচ এর সাথে এই রংপুর অঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত আছে।
তারা আরও বলেন, শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নিজের টাকায় তৈরি করেছে। ইচ্ছে করলে নিজস্ব অর্থায়নে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেন। রংপুরের মানুষ চীন-ভারত কিংবা বাহিরে দেশ বুঝতে চাইনা। নিজস্ব অর্থায়নে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
নেতারা আরও বলেন, প্রতিবছরে শত শত তিস্তা পাড়ের পরিবাররা ভাঙণের মুখে পড়ে নি:শ্ব হয়। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কয়েক বস্থা জিও ব্যাগ ফেলে দিয়ে শত শত কোটি টাকা লোপাট করেন। কিন্ত সরকারী লোক দেখে তিস্তা পাড়ের মানুষরা তাদের কিছু বলে না। পানি বেড়ে গেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের ঈদের দিনের মত হয়ে যায়। আর তিস্তার মানুষরা হাতে থালা নিয়ে ভিক্ষা করেন। এভাবে আর চলতে পারে না। তাই আগামী বাজেটেই প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়ার ঘোষণা দিতে হবে। যদি এটি করা না হয় তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি দেয়া হবে।

লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, তিস্তা খনন না হওয়ার কারণে এবার মাত্র তিন হাজার কিউসেক পানির ভার সইতে পারছে না। সে কারণে অসময়ে বন্যা হয়েছে। বর্ষাকালে এই পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে। তাই বিজ্ঞান সম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কোনো বিকল্প নেই। সারা বছর তিস্তায় পানি রাখতে ভারতের সাথে তিস্তা চুক্তি সই নিশ্চিত করার বিষয়টি আর কোনোভাবেই বিলম্ব করা যাবে না। তিস্তার ভাঙন, বন্যা, খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, ভাঙনের শিকার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন, তিস্তার শাখা-উপশাখা ও উপনদীগুলোতে পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন, দখল ও দূষণমুক্ত করে জলাধার নির্মাণ, দুই পাশে শিল্পায়নের মাধ্যমে বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান করতে হবে।

মন্ত্রী-এমপিদের উল্যেখ করে তারা আরও বলেন, দক্ষিন অঞ্চলে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু উত্তর অঞ্চলে কোন উন্নয়ন নেই। ঢাকায় বসে তারা থাকেন। এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর নেন না তারা। এই অঞ্চলের পাঁচজন মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তিস্তা নিয়ে তারা কোন কথা বলেন না। তাহলে কি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নেরর সাথে একমত নয়। তাই তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রীসভায় আলোচনা করার অনুরোধ করেন নেতারা।

এদিকে তিস্তা কনভেনশনে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আব্দুল হাকিম, বখতিয়ার হোসেন শিশির, নরুজামান খান, মো সাদেকুল ইসলাম, আব্দুল রাজ্জাক, রবিউল ইসলাম, সামছুল হক, গোকুন্ডা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন।

পরে তিস্তা পাড়ের মানুষদের জন্য এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com