ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ ঘরে রশি পেঁচিয়ে সোনালী আক্তার নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। সন্তান অসুস্থ হওয়ায় তিনি হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি স্বজনদের।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের আকচা মুন্সিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ৩২ বছর বয়সী সোনালী একই গ্রামের হাজিমুল আলীর স্ত্রী। তিনি তিন সন্তানের মা।

নিহতের স্বামী হাজিমুল জানান, সকাল থেকে সংসারের কাজ করেন সোনালী। তিনি সকাল ৭টার মধ্যে ব্যবসার কাজে সবজির আড়তে চলে যান। আজও তাকে হাসিমুখেই বিদায় জানান তার স্ত্রী। পরে মুঠোফোনে জানতে পারেন তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।

হাজিমুল বলেন, পরপর আমাদের তিন ছেলে হয়েছে। আমার স্ত্রীর একটি কন্যা সন্তানের খুব শখ ছিল। চার মাস আগে জন্মগত হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে আমাদের তৃতীয় ছেলের জন্ম হয়। সেই থেকে আমার স্ত্রী মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েন। প্রতিদিন রাতে কান্নাকাটি আর আফসোস করতেন। আমি অনেক বোঝাতাম। ভরসা রাখতে বলতাম।

প্রতিবেশী তাহমিনা তামান্না বলেন, তৃতীয় সন্তানের জন্য হতাশায় ভুগছিলেন সোনালী। অনেক টাকা পয়সাও দৈনিক খরচ করতেন সন্তানের চিকিৎসার জন্য। তাকে প্রায় বলতে শোনা যেত এ জীবন রাখবো না। মাঝে মধ্যে সন্তানদের মেরে আত্মহত্যা করতে চাইতেন। আমরা অনেক বোঝাতাম। সান্ত্বনা দিতাম। ঘটনাটি বেদনাদায়ক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিহতের স্বামী কাজে চলে যাওয়ার পর অনেক্ষণ দরজা বন্ধ থাকায় এবং অনেক ডাকাডাকিতেও কোনো সাড়া না পেলে পরিবারের লোকজন আমাদের খবর দেন। আমরা দরজা ঠেলে দেখি ঘরের আড়ার সঙ্গে মরদেহটি ঝুলছে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খবর দেই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কুলুরাম রায় বলেন, এলাকার সম্ভ্রান্ত ও সম্মানী ব্যক্তির পরিবার এটি। হতাশাগ্রস্ত হয়ে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তিনি জানান।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।