মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন




একজন পরিশ্রমী মেধাবী শিক্ষার্থীর গল্প

একজন পরিশ্রমী মেধাবী শিক্ষার্থীর গল্প

এস এম রাফি চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
সুমাইয়া আক্তার চাঁদনী সাধারণের মাঝে অসাধারণ এক শিক্ষার্থী। সে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের থানাহাট বাজার এলাকায় এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। দুই বোন এক ভাই ও বাবা মাকে নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। বাবা হোটেল ব্যবসায়ী, মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হউক এটা যেন স্বপ্ন ছিলো পরিবারের

চাঁদনীর পড়াশোনা শুরু হয় ফুলকলি মেরিট কেয়ার স্কুলে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেন পড়ে নবম-দশম শ্রেণিতে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। অনেকেই মানবিক বিভাগ বেছে নেয়া নিয়ে নিরুৎসাহিত করার পরেও নিজ সিধান্তে অটল ছিলো চাঁদনী।২০১৮ তে এসএসসিতে জিপি-এ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি এবং সাধারণ বৃত্তিও পায়। ভালো ফলাফলের পর কলেজ হিসেবে বেছে নেন গোলাম হাবীব মহিলা ডিগ্রী কলেজকে।

কলেজ জীবনের শুরুতেই২০১৮ সালে একই উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের পানাতি পাড়া এলাকার বীর মুক্তি যোদ্ধা নুরু জামানের ছেলে আব্দুল্লাহ মহসিনের সাথে বিয়ে হয়।বিয়ে হলেও পড়াশোনাতে প্রভাব পড়েনি একটুও। নতুন সংসার, পড়াশোনা সমানভাবে সামলে নিয়েছিলেন চাঁদনী ২০২০-এ এইচএসসি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারণে সারাদেশে এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, দূর পাল্লার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফলাফল দেয়া হয়। চাঁদনীর ফলাফল আসে জিপিএ ফাইভ।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যুদ্ধে তার প্রবল আত্মবিশ্বাস, পরিবারের সকলের দেয়া উৎসাহ, অর্ধাঙ্গের অনুপ্রেরণায় কঠোর পরিশ্রমের ফলাফলই মূল আকর্ষণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে পড়বে এটা বাবা মার চাওয়া। আর মেয়ের চাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়ার।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভর্তি যুদ্ধে চাঁদনী ঢাবি-“বি” ইউনিটে ১৫৮৭তম, রাবি-“এ” ইউনিটে ৮৪৭তম,”বি” ইউনিটে ৫০তম এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৭৩.৭৫পয়েন্ট পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
এবিষয়ে শিক্ষাথী সুমাইয়া আক্তার চাঁদনী বলেন,আমার ইচ্ছা আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক বা এডমিন ক্যাডার হতে চাই।
এই সাফল্য আমার একার নয়। পরিবার, শিক্ষক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের যারা আমাকে সবসময় উৎসাহ দিয়ে, দিক নির্দেশনা দিয়ে পাশে থেকেছে। আমি তাদের কাছে চিরঝনী মানুষের কাছে। আমি সবার কাছে দোয়া চাই।
শিক্ষাথীদের উদ্দেশ্যে সে বলেন,তোমরা লেখা পড়া চালিয়ে যাও বিশ্বাস রাখো সফল হবে।
চাঁদনীর বাবা চাঁদ মিয়া বলেন,মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ায় আমি খুশি তবে ভর্তি করতে অনেক টাকার প্রযোজন আমার যে হোটেল আছে তাতে ভাড়া দিতে হয়। যে টুকু আয় হয় তাই দিয়ে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি এই ভর্তি এবং মাসিক খরচের টাকায় কোথায় পাবো জানিনা যদি কোন ব্যাক্তি সহযোগিতা করে তাহলে ভালো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com