শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন




তারাগঞ্জে ড্রাগন ফলের সফল চাষী শামীমা আক্তার

তারাগঞ্জে ড্রাগন ফলের সফল চাষী শামীমা আক্তার

এনামুল হক দুখু, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : 

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ড্রাগন ফলের চাষ করে বেশ সাড়া ফেলেছেন রংপুরের প্রথম নারী কৃষি উদ্দ্যোক্তা শামীমা আক্তার।

 

উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর খানসাহেব পাড়া গ্রামে শামীমার বাড়ি। তার বাবা শামসুল কাদের সরকার একজন সফল কৃষক। শামীমা আক্তার ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার কৃষি কাজের প্রতিও মোটামুটি আগ্রহী হয়ে উঠেন।

 

তাঁর বাবা শামসুল কাদের সরকার কৃষি ফসল ও মাছ চাষের জন্য উপজেলার শ্রেষ্ঠ কৃষকসহ রংপুর জেলা পর্যায়েও কৃষির বিভিন্ন পুরষ্কার লাভ করেছেন।

 

১৯৯৫ সালে প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় সে। বিয়ের পর সে একবার ভ্রমণে ভিয়েতনামে যায়। সেখানে  গিয়ে ড্রাগন ফল খেয়ে তখনেই মনস্থির করেন যে নিজের বাড়িতে এই ড্রাগন ফলের চাষ করবেন। তখন থেকেই তিনি বাড়িতে এসে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ড্রাগন ফলের চাষ সম্বন্ধে ধারনা নেন।

 

শামীমা ড্রাগন ফলের বাগান তৈরীর প্রথম দিকে তাঁর বাবা শামসুল কাদের সরকারের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করেন। তার বাবার দেয়া ৫৫ শতক জমিতে ২০১৬ সালে প্রায় ৮০০ ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করে বাগান শুরু করেন। চারাগুলো পরিচর্যা করতে করতে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠে।

 

এই নারী কৃষি উদ্দ্যোক্তা বলেন, বছরে প্রতিটি গাছে ৫০-৭০টি ড্রাগন ফল ধরে। প্রতিটি ফল ওজনে প্রায় ৬০০-৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। ড্রাগন ফল প্রতি কেজি প্রায় ৬০০-১০০০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।

 

শামীমা আক্তার বলেন, ড্রাগন ফলের চাষ সম্বন্ধে ধারনা নিতে এখন অনেক দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন আমার কাছে। আমি তাদের বিভিন্নভাবে ড্রাগন ফলের চাষ সম্বন্ধে ধারনা দিয়ে এর চাষে উদ্বুদ্ধ করে থাকি। অনেকে এলাকার বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ছাঁদে ও  আঙিনায় অল্প করে ড্রাগন ফলের চারা লাগিয়ে চাষাবাদ করছে।

 

তিনি আরও বলেন, ড্রাগন এর গাছে তেমন সার দেয়ার প্রয়োজন হয় না। বছরে গড়ে দুই-একবার সার দিলে আর তেমন প্রয়োজন পড়ে না। এর গাছে পাতা কম থাকার কারণে পোকার আক্রমণ কম হয়ে থাকে। ভালভাবে পরিচর্যা করলে দীর্ঘসময় এর থেকে ফল পাওয়া য়ায়। আমাদের দেশে কৃষক ও খামারীদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে এ ফলের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে বিদেশি ফলের আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমবে বলে আশা করা যায়। এরই মধ্যে প্রায় দুইশ কেজি ফল বিক্রি করেছি।

 

এটি ক্যাকটাস জাতীয় হওয়ায় রোগবালাই কম হয়। এ কারণে সহজেই এ ফল চাষ করা যায়। চারা লাগানোর ১ বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু হয়। আকার-আকৃতি, পুষ্টিগুণ ও দামের কারণে আমাদের দেশের বাজারগুলোতে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

 

রংপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, তারাগঞ্জে শামীমা আক্তার যে ড্রাগন ফলের বাগানটি গড়ে তুলেছে সেটি রংপুরের সবচেয়ে বড় ড্রাগন ফলের বাগান। তিনি রংপুরের প্রথম নারী কৃষি উদ্দ্যোক্তা। আমরা তাকে বিভিন্নভাবে তার বাগানে সহযোগিতা করছি।

 

তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উর্মি তাবাছছুম বলেন, আমি শামীমা আক্তারের ড্রাগন বাগানটিতে বিভিন্নভাবে কৃষি সহযোগিতা করছি। সে এখন ওই বাগান থেকে মোটামুটি আয় করতেছে। এ উপজেলায় ড্রাগন ফলের চাষের জন্য  আমরা আরও অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com