মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন
কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি :
ইজারা ছাড়াই অবৈধভাবে দশচাকার জ্যাম ট্রাক এবং মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে করে চলছে সরকারী নদী খননের বালু লুটের মহোৎস্বব।
দিনরাত সমানভাবে বালু লুটের ফলে সরকার একদিকে যেমন কয়েককোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। অপর দিকে বালুবোঝাই দশচাকার ট্রাক এবং মাহিন্দ্র ট্রাক্টর সড়ক দিয়ে চলার কারণে গ্রামীন সড়কগুলো ভেঙ্গে একাকার হয়ে যাচ্ছে।
বালু লুটের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসন একে অপরের উপর দায়ভার চাপিয়ে দিয়ে দায় এড়িয়ে চলছেন।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ৬৪ জেলায় নদী ও খালবিল খনন প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় চাঁড়ালকাঁটা নদী খননের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। নদী খননের ঠিকাদার নদী খনন করে উত্তোলন কৃত বালু নদীর তীর সংলগ্ন ৮৫ স্থানে স্তুপ করে রাখে।
গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুটিমারী ইউনিয়নের শালটিবাড়ি, কালিকাপুর, পুর্ব কালিকাপুর, নিতাই ইউনিয়নের মুশরুত পানিয়ালপুকুর, বেলতলি, কালুরঘাট ব্রীজ সংলগ্ন এলাকা, বাহাগিলি ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট, বাহাগিলি ষ্টিল ব্রীজের পাশ থেকে দিনে এবং রাতে ইজারা ছাড়াই বালু দস্যুরা সমানভাবে দশচাকার জ্যাম ট্রাকে এবং মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে করে বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। নিতাই ইউনিয়নের বাসিন্দা এজাজুল মিয়া আলতাফ হোসেন,রফিকুল মিয়া জানান, কালুরঘাট ব্রীজের দুই দিকে এবং নিতাই বাড়ি মধুপুর স্কুলের মাঠে চার থেকে পাঁচটি বালুর স্তুপ ছিল।
বালু ব্যবসায়ীরা সমস্ত বালু দিনে এবং রাতের বেলা লুট করে নিয়ে গেছে। পুটিমারী ইউনিয়নের শালটিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা রেয়াজুল, ছকমাল হোসেন, আবুল হোসেন বলেন, শালটিবাড়ি কালিকাপুর এবং পূর্ব কালিকাপুরের দশ থেকে ১৫ টি স্তুপ শেষ হয়ে গেছে। বাহাগিলি ষ্টীল ব্রীজ এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারুল হক জানান, ব্রীজের উত্তর দিক থেকে দশচাকার জ্যাম ট্রাক এবং মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে করে বালু নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী বালু দস্যুরা, যার সাথে প্রশাসনের নিম্নশ্রেণীর কর্মচারীরাও জরিত আছেন।
সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোফাখারুল ইসলাম বলেন, গত ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর নীলফামারী পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বালু নিলামের জন্য পত্রিকায়
বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল। এর বেশি আমাদের করার কি আছে আমরাতো বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে পারিনা। এটা উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপার।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার রোকসানা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৬ টি লট সরকার নিধার্রিত মুল্য অনুযায়ী নিলামের মাধ্যমে প্রায় ২৯ লাখ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো ইজারা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ইজারা ছাড়াই দশচাকার জ্যাম ট্রাক এবং মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে করে অবৈধভাবে বালু লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল আলমগীর হোসেন নামে এক বালু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে সরকারী বালু লুট করার সময় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রাতের বেলা বালু লুট করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতের বেলা বালু লুট করলে আমাদের করার কিছু নেই।