শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫২ অপরাহ্ন




শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি নামফলক, ক্ষুব্ধ ভাষাসৈনিকরা

শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি নামফলক, ক্ষুব্ধ ভাষাসৈনিকরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। এর পাশেই ইংরেজি বর্ণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে ‘আদিতমারী’ নাম ফলক। এতে ক্ষুব্ধ ভাষাসৈনিক, ভাষা প্রেমীসহ গোটা জেলাবাসী। শহীদদের সম্মানার্থে দ্রæত ইংরেজি বর্ণ অপসারণ করে ফলকটিতে বাংলা বর্ণ ব্যবহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি অক্ষরে নাম ফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে দোষের কিছু নেই।
রাষ্ট্রীয় অর্থে ওই উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার। আর ওই শহীদ মিনারের সামনেই ইংরেজি মোটা অক্ষরে তৈরি করা হয় নাম ফলক। এমন কাজে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের দায়িত্বশীলতা নিয়ে।
লালমনিরহাটের ভাষাসৈনিক আব্দুল কাদের ভাসানী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে বাংলা ভাষার জন্য লড়াই করেছি, আন্দোলন করেছি, যে ভাষার জন্য কতজন বুকের তাজা রক্ত মাটিতে ঠেলে দিয়েছেন, আজ সেই ভাষাকে অমর্যাদা করা হচ্ছে। বাংলা ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্মরণেই নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। আর সেই শহীদ মিনারের সামনে ইংরেজি বর্ণমালা থাকা বাংলা ভাষাকে অপমান এবং অমর্যাদা করা।
তিনি দ্রæত ইংরেজি বর্ণমালা অপসারণ এবং বাংলা ভাষার অমর্যাদাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
ভাষাসৈনিক জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের এই নির্বুদ্ধিতা মেনে নেয়ার মতো নয়। কতো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই বাংলা ভাষা। রক্তে ঝড়া মায়ের ভাষাকে উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা কখনোই অপমান করতে পারে না।
তিনি দ্রæত ইংরেজি বর্ণমালায় লেখা নাম ফলকটি অপসারণ করে সেখানে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে নাম ফলক নির্মাণের দাবি জানান।
ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে লালমনিরহাট জেলার একমাত্র বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল হক জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না এবং বাংলা রাষ্ট্র ভাষাও হতো না।
তিনি বলেন, ভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবন দান ও বাংলা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নজির বিশ্বে আর নাই। তিনি এই ভাষার মাসেই দ্রæত ইংরেজি বর্ণমালা অপসারণের দাবি জানান।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনছুর উদ্দিন বলেন, যৌথ পরিকল্পনায় ও সবার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা করেই তৈরি করা হয়েছে ওই নাম ফলক। উপজেলা পরিষদের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যই শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি অক্ষরে উপজেলার নাম ফলকটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি দোষের কিছু নয় বলেও দাবি করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com