বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন




শীতে কাঁপছে লালমনিরহাট, বিপাকে নি¤œ আয়ের মানুষ

শীতে কাঁপছে লালমনিরহাট, বিপাকে নি¤œ আয়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাট। এ জেলায় শীতের আমেজ কিছুটা আগেই অনুভূত হয় এবং এর ব্যাপ্তিও থাকে দীর্ঘ সময়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
শীতের শুরু থেকে রাতে শীতের ঘনত্ব থাকলেও সকালে সূর্যের দেখা মেলায় শীত তেমন কাবু করতে পারেনি এ জনপদের মানুষকে। তবে গত সপ্তাহ ধরে এ জনপদে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ার পাশাপাশি যুক্ত হওয়া শৈত্যপ্রবাহের কারণে ঠাÐা বেড়েছে কয়েকগুন। দিনের মধ্যভাগে সূর্যের দেখা মেললেও গত দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে ঠাÐার দাপটও বেড়েছে কয়েকগুন। শীতের তীব্রতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে জেলার প্রায় অর্ধশত চরাঞ্চলের ছিন্নমুল পরিবার। শ্রমজীবী মানুষ পেটের দায়ে তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশাকে উপেক্ষা করে কাজে নেমে পড়েছেন। সকাল পর্যন্ত হাট বাজার বিপণীবিতান ও সড়কগুলোতে মানুষের আনাগোনা অনেকটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি কাজের জন্য ঘরের বাইরে বের হয়েছে মানুষ। ফুটপাত ও পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে নি¤œআয়ের মানুষদের ভিড়।
রিকশা চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, শীতের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো পেটে ভাত যাবে না। পরিবারের সদস্যদের খাবার যোগাড় করতেই রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু যাত্রী না থাকায় দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা আয় হয়েছে। দিনভর চেষ্টা করে যা আয় হবে তা দিয়েই চলবে সংসার।
গোবর্দ্ধন চরের আজিজুল, রফিকুল ও নেছার আলী বলেন, শীতের সময় চরাঞ্চলের ঘরেও থাকা কষ্টকর। বাঁশে ও ভাঙা বেড়া দিয়ে শীত ঘরে ঢুকে বিছানাও হিম হয়ে যায়। ঠাÐার কারণে রাগে ঘুমও হয় না। শুরু হওয়া শৈত্যপ্রবাহের হিমেল বাতাশে বুকের ভিতরেও ঠাÐা লাগে। এই ঠাÐাতেও পেটের দায়ে মাঠে কাজ করি। কাজ না করলে তো পুরো পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
গাছের পাতা ও খড় কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শরীর তাপানো ভেলাবাড়ি গ্রামের সকিনা, বুলবুলি ও মইনুদ্দিন বলেন, এমন ঠাÐা কখনই দেখি নাই। সারা শরীর শুধু কাঁপছে। ঠাÐা বাতাসে ঘরের বিছানাও ঠাÐা হয়ে যায় ঘুম আসে না।
শীতার্ত মানুষদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীত বস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ অব্যহত রয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে দাবি করেছেন শীতার্তরা। শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বলের পাশাপাশি শিশুদের জন্য সোয়েটার বিতরণের দাবি জানান শীতার্ত ছিন্নমুল এসব পরিবার।
তীব্র শীতের কারণে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। সদর হাসপাতালসহ সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ঠাÐাজনিত সর্দ্দি-জ্বর, কাশি, নিউমেনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগে। সকল হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, সরকারিভাবে ৪০ হাজার ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ১০ হাজার মিলে মোট ৫০ হাজার পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শিশুদের জন্য সোয়েটারের বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com