শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন




শ্যালো চালিত ড্রেজার দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে দক্ষিণ বাহাগিলী সন্যাসাীপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ

শ্যালো চালিত ড্রেজার দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে দক্ষিণ বাহাগিলী সন্যাসাীপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ

কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধি :
অনিয়মেই যেখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটির কাজ শ্রমিক দিয়ে না করে শ্যালো চালিত ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করে মোটা অংকের অর্থ লোপাটের পাঁয়তারা করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত ৫.৭৭ একর জমির উপর আশ্রয়ণ প্রকল্পটির সংলগ্ন খননকৃত নদী থেকে শ্যালা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় এক সময় ভয়াবহ ভাঙ্গণের মুখে পড়বে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি বলে এলাকাবাসী মনে করছে।

আর এসব অনিয়মেই নিয়মে পরিণত করা হচ্ছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাহাগিলী সর্ন্যাসীপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাট করার কাজে।

সূত্র জানায়- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প হতে ০৪ মার্চ ২০২০ ইং তারিখের স্মারক নং- ০৩.০২.০০০০.৭০৩.১৪.০৭৮.১৯-৫০ মূলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাহাগিলী সন্যাসীপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাট করা কাজের জন্য ৩৫৪.৪০১ মে. টন গম অনুমোদিত হয়ে ১৮০.০০০ (একশত আশি দশমিক শূন্য শূন্য শূন্য) মে. টন গম বরাদ্ধ দেন।

বরাদ্দাদেশে ০৪ (চার) নং ক্রমিকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচীর পরিপত্র (ডিসেম্বর ২০১৪) অনুসরণ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়।

কিন্তু এ পরিপত্র অনুযায়ী মাটি ভরাট করার কাজ শ্রমিকদের দিয়ে করার কথা থাকলেও তা না করে নদী থেকে বড় বড় শ্যালো চালিত ড্রোজার দিয়ে বালু তুলে মাটি ভরাট করা হচ্ছে।

এছাড়া নদীটি সরকারি ভাবে খনন করায় নদীটি গভীর হয়ে আছে। নদীটি আশ্রয়ণ প্রকল্পটির সংলগ্ন হওয়ায় ওই গভীর নদী থেকেই মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ভরাট করা হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পটির মাটি ভরাট করার কাজ। ফলে এক সময় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে প্রস্তুতকৃত আশ্রয়ণ প্রকল্পটি।

ফলে সরকারের মহৎ উদ্যোগটি ভেস্তে যেতে পারে। এছাড়া শ্রমিক দিয়ে মাটির কাজ না করে মেশিন দিয়ে বালু তুলে মোটা অংকের অর্থ লোপাটের সুযোগ নিয়েছে প্রকল্প সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সকলে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।

এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরিপত্র অনুযায়ী এ কাজের সার্বিক তত্বাবধান ও বার বার প্রকল্প পরিদর্শনের কথা থাকলেও তিনি দায়সারাভাবে কাজটি দেখছেন বলেও জানা গেছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে- প্রকল্প এলাকার সাথে নদীর খননকৃত বালুর স্তুপ চারদিক দৃশ্যমান হয়ে আছে। এই স্তুপকৃত বালু থেকেই প্রস্তাবিত প্রকল্পে বালু ব্যবহার করা হবে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। প্রস্তাবিত ৫.৭৭ একর জমির উপরে আশ্রয়ণ প্রকল্পটির মাটির কাজে নেই কোন শ্রমিক।

বড় বড় ৫টি শ্যালো চালিত ড্রোজার মেশিন দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। নদী সংলগ্ন প্রকল্পটি হওয়ায় প্রকল্প সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই শ্যালো চালিত মেশিন দিয়ে বালু ভরাট করে মোটা অংকের অর্থ লোপাটের সুযোগ নিয়েছে। নদী সংলগ্ন ও নদী থেকে বালু তোলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি এক সময় ভয়াবহ ভাঙ্গণের কবলে পড়ার আশংকাও রয়েছে।

প্রকল্প সভাপতি বাহাগিলী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ্’র কাছে মুঠোফোনে শ্রমিক দিয়ে প্রকল্পের বালু ভরাট না করে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু ভরাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিজে কোন উত্তর না দিয়ে স্থানীয় এক ডিও ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলার কথা জানান। এছাড়া তার কাছে সম্প্রতি খননকৃত নদী থেকে বালু উত্তোলন করে প্রকল্পটি ভরাট করায় একটা সময় নদী ভাঙ্গণের কবলে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি পড়ার আশংকা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তার মতামত দিতে অস্বীকৃতি জানান।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু হাসনাত সরকার শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করে জানান- আমি যতটুকু জানি জমির বিষয়ে সমস্যা থাকায় তা সমন্বয় করতে একটা অর্থ খরচ হয়েছে। এ কারণে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে তা সমন্বয় করতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। পরিপত্র অনুযায়ী কাজ না হওয়ার বিষয়ে কথা বললে তিনি আরও জানান- আসলে প্রকল্পটির কাজ শ্রমিক দিয়ে করার নিয়ম। বিষয়টি আমি দেখছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান- শ্যালো মেশিন দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পটির মাটি ভরাটের বিষয়টি আমার জানা নেই। সাধারণত নদী সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো হয়। পরিপত্র অনুযায়ী যাতে কাজটি হয় সে ব্যাপারে পিআইও সাহেবকে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছি।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com