বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন




চিলমারী থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে, ব্রহ্মপুত্র নদের সাদা কালো বালি

চিলমারী থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে, ব্রহ্মপুত্র নদের সাদা কালো বালি

আনোয়ারুল ইসলাম, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
যুগের পর যুগ বহ্মপুত্র বক্ষে ধারণকৃত উজান থেকে বয়ে আসা খনিজ বালি কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এলাকা একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বছরের পর বছর প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার বালি বিক্রি করে দিচ্ছে। মূলবান খনিজ বালি ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন বাড়ি ভিটা উচুকরণ, মাঠ, পুকুর ভরাট করণ, রাস্তা বাঁধা ইত্যাদি অবকাঠামোর কাজে। অসমর্থিত সূত্র জানায়, একটি মহল গত বছর বেশ কয়েকটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদের বালি চরে স্তুপ করে রাখে।এখন তারা প্রতি নিয়ত উক্ত খনিজ কালো বালি স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে ব্যাগে ভরে ট্রাক যোগে অনত্র স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন বালি উত্তোলনের নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বালি সিন্ডিকেট তা তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন আদলে পাচার করে দিচ্ছে উক্ত বালি। ঘটনায় প্রকাশ ২০০৭ ইং সনের ১৪ জুন দেশের একটি শীর্ষ ইংরেজী দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ্য করা হয় যে, চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশ্বমানের খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ ভূ-তাত্তি¡ক জরিপের উপর ভিত্তি করে ২০০৭ সালে ব্রিটিশ কোম্পানি পিএলসি তখন ৪ মাস ব্যাপী চিলমারী ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় অনুসন্ধান চালিয়ে মূল্যবান ধাতব খনিজ সম্পদের সন্ধান পায়। উক্ত গবেষনা প্রতিষ্ঠান চিলমারী এলাকার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় প্রায় ৩৯৮৭ হেক্টর জমিতে ২৪ টিরও অধিক স্থানের ১৫০ ফুট মাটির গভীর থেকে বালু সংগ্রহ করে কক্সবাজার এ্যাটোমিক এনার্জি কমিশনে নিয়ে গবেষনা চালায়। তাদের ধারনা, উক্ত এলাকায় যে ৮ধরনের খনিজ পদার্থ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে তা অষ্টেলিয়ার নর্থ ষ্ট্যান্ডব্রোক দ্বীপে যে খনিজ সম্পদ রয়েছে তার চেয়ে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় সংরক্ষিত খনিজ সম্পদ ০.৫ শতাংশ বা তদউর্ধে লাভজনক হওয়ার ধারনা করেছেন। তারা আরো ধারনা করেন যে, গোটা পৃথিবীতে প্রভেন গানের্টর সংরক্ষণ ৬৭ মিলিয়ন টন, সেখানে শুধু ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাতেই রয়েছে ৬৮ মিলিয়ন টন। প্রাপ্ত খনিজ বালির নমুনা কক্সবাজারের এ্যাটোমিক এনার্জি কমিশনের গবেষনাগারে এই মূল্যবান খনিজ সম্পদের প্রামাণ মিলবার পর পরবর্তী বিশ্লেষন ও নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাপ্ত খনিজের ১০০টি নমুনা অষ্টেলিয়ার পার্থ ল্যবরেটরিতে পাঠানো হয়। উক্ত ল্যাবরেটরির ফলাফল পরের বছরের মধ্যে প্রকাশের কথা থাকলেও আর কখনো এই বিষয়ে জানা যায়নি। তবে একই বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক ডঃ বদরুল ইমাম দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত, “কুড়িগ্রামে ধাতব খনিজ বালির বিশাল মজুদ” শিরোনামে একটি নিবন্ধনে উল্লেখ করেছেন করেছেন, কুড়িগ্রামেই লিকিয়ে রয়েছে দেশের বৃহৎ খনিজ পদার্থের বিশাল মজুদ যা কক্সবাজারের টেকনাফের মজুদকৃত খনিজ বালির তুলনায় অনেক গুন বেশি। শুধু তাই নয়, এই খনিজ বালির মজুদ বিশ্ব সেরা খনিজ বালির মজুদের সমুতুল্য। এটা হতে পারে দেশের অর্থনীতির একটি বিশাল সাফল্য। তাই এসব সূত্র ধরেই চিলমারীর সচেতন মহল ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকা হতে অজান্তেই পাচার হয়ে যাওয়া খনিজ সাদা কালো বালি রক্ষা করার তাগিদে নদ হতে যে কোন বালি উত্তোলনে চির স্থায়ী নিষেধাআজ্ঞা জারি করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন







© All rights reserved © uttorersomoy.com
Design BY BinduIT.Com